রামু (কক্সবাজার) থেকে আবু তালেব সিকদার
কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের পথে সাত দিন পর বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা পাহারায় নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টমার্টিন থেকে বিকল্প পথে তিনটি ট্রলারে করে দুই শতাধিক হোটেলকর্মী, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ টেকনাফে পৌঁছেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান সংঘাতের জেরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এই রুট দিয়ে চলাচলের সময় নাফ নদের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে কয়েক দফায় গুলি ছোড়া হয়। এতে বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থিত দ্বীপটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। কোনো মানুষ দ্বীপে যাওয়া-আসা করতে পারেনি। সেন্টমার্টিন দ্বীপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ঝুঁকি নিয়েই বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে তিনটি ট্রলার টেকনাফ গেছে। গত বুধবার রাত থেকে টেকনাফের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আবারও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরকান আর্মির যুদ্ধ তীব্র হয়েছে। এতে সেন্ট মার্টিন-টেকনাফ রুটে ঝুঁকি বেড়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, বেলা ১টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট পৌঁছায় তিনটি ট্রলার। সেখান থেকে তিনটি ট্রলার যোগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় অন্তত দুই শতাধিক মানুষ টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা ৩টার দিকে ট্রলারগুলো টেকনাফের মুন্ডারডেইল সাগর উপকূলে পৌঁছে। কিন্তু সাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে এসব ট্রলার থেকে লোকজনকে সরাসরি তীরে ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কূল থেকে কয়েকটি ডিঙি নৌকা উপকূলের কিছু দূরে সাগরে অবস্থানকারী ট্রলারগুলোর কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময় বড় ট্রলার থেকে এসব মানুষকে ডিঙি নৌকায় তুলে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে টেকনাফের এই ঘাট থেকে সেখানে আটকা পড়া লোকজন চারটি ট্রলারে করে সেন্টমার্টিনে গেছেন বলে জানা গেছে। অপর দিকে নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার জলসীমায় যুদ্ধ জাহাজ টহল দিতে দেখা গেছে। গত দুদিন জাহাজটি নাফ নদের মোহনায় টহল দিচ্ছে। গতকাল রাত থেকে আকাশে যুদ্ধবিমান চক্কর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মূলত কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে বড় জাহাজযোগে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে যাবেন। এটা ব্যবসায়ী এবং জাহাজ মালিকরা মিলে করবেন। প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন। এ ছাড়া, বঙ্গোপসাগর হয়ে এখন ট্রলারে যেসব যাত্রী আসা-যাওয়া করছে, তাদেরও ওখানে কিছু পণ্য নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে খাদ্য সংকট হবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
